Posts in Category: সফলতা

চীন দেশে বৃত্তি নিয়ে পড়তে যেতে কি করনীয় ?

আগামী বছর যারা চীন দেশে বৃত্তি নিয়ে পড়তে যেতে চান- তাদের কি করনীয় সেই বিষয়ে কথা হচ্ছিল মো: শফিউল ইসলামের সাথে। আসছে সেপ্টেম্বর থেকে বেইজিং এর চায়না এগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সিটিতে তিনি শুরু করতে যাচ্ছেন  মাস্টার্স-ইন-প্ল্যান্ট প্যাথলজি এবং তিনি চীনা সরকারের শিক্ষাবৃত্তি নিয়ে এই প্রোগ্রামে অধ্যায়ন করতে যাচ্ছেন।

প্রশ্ন : চীন দেশে বৃত্তি নিয়ে পড়তে যেতে কি করনীয় ?

যারা সেপ্টেম্বর ২০২৫ ইনটেকে চীনে আসতে চাচ্ছেন তারা IELTS এর জন্য প্রিপারেশন নেওয়া শুরু করে দিতে পারেন। চীনে Chinese government scholarship এর সাধারনত ২ টা ক্যাটাগরি Type- A এবং Type- B। দুইটা স্কলারশীপের সুযোগ সুবিধা একই কিন্তু Type- A যদি পেয়ে যান তাহলে রাউন্ড এয়ার টিকেট টা ফ্রি দেওয়া হয়। Type A এর আবেদন শুরু হয় মিড ডিসেম্বর থেকে। তাই Type -A ধরতে হলে আপনাকে নভেম্বরের প্রথম সপ্তার মধ্যেই IELTS টা দিয়ে ফেলতে হবে। চীন IELTS এর কদর অনেক। IELTS এ ভালো স্কোর তুলতে পারলে চান্স অনেকটা বেড়ে যায়, কারন ম্যাক্সিমামই MOI (medium of Instruction)দিয়ে আবেদন করে।

Type A এর আবেদন হয় বাংলাদেশ শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে। আবেদনপত্র সার্কুলার টি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। Type A তে আপনি সর্বোচ্চ দুইটা ভার্সিটি তে আবেদন করতে পারবেন।

আর Type B তে পারবেন একটা। এই মোট ৩ টা ভার্সিটিতে আবেদন করতে পারবেন Chinese government scholarship ( CSC) এর মাধ্যমে। কিন্ত Type B টা হয় ইউনিভার্সিটি ট্র‍্যাকের মাধ্যমে অর্থাৎ আপনাকে সরাসরি ইউনিভার্সিটিতে আবেদন করতে হবে এবং CSC website এ আবেদন করতে হবে। আর Type A তে Education ministry + CSC website এ আবেদন করতে হয়। কিন্তু এই বছর থেকে Type A তে একটু চেঞ্জ এসেছে।Bangladesh Education Ministry এখন প্রি এডমিশন লেটার চাচ্ছে যা আপনাকে আগেই সংগ্রহ করতে হবে, আপনি যেই ভার্সিটিতে আবেদন করবেন সেই ভার্সিটি থেকে। এক্ষেত্রে আপনি ভার্সিটিতে আপনার সকল ডকুমেন্টস মেইল করে বলবেন যে, আপনি Type A এর জন্য আবেদন করতে চান। ভার্সিটি আপনার ডকুমেন্ট চেক দিয়ে ইলিজিবল মনে করলে প্রি এডমিশন লেটার দিয়ে দিবে। কিন্ত এটা ম্যান্ডাটরি না। আপনি শুধু মাত্র প্রফেসরের থেকে যে Acceptance letter নিবেন সেটা দিলেও হবে। কিন্তু type A scholarship is very competitive and uncertain. প্রফেসর খুজতে শুরু করবেন লেট অক্টবর থেকে। প্রফেসর কে মেইল করার নিয়ম সব দেশে মোটামোটি একই। CSC scholarship এর সুবিধা : Free air fare ( only for Type A scholar) Tuition fee free Free accommodation Health insurance free Monthly stipend 3000 Yuan for Ms program ( Approx 51k BDT) And 3500 for PhD program ( Approx 60k BDT) যতদুর জানি চীনে লিভিং কস্ট তুলোনা মুলক ভাবে অনেক কম। বড় সহর গুলোয় ১২-১৫k আর ছোট শহর গুলোয় ৭-১০k এর মত খরচ হয়। তাই আপনি যদি এই স্কলারশীপ পেয়ে যান তাহলে ভালো একটা মানি সেভ করার সুযোগ থাকছে যেহেতু বাড়তি কোন আর খরচ এখানে নাই। আজকে CSC scholarship নিয়েই লিখলাম। পরবর্তী স্কলারশিপ গুলোর ডিটেইলস সিরিজ আকারে লিখবো ইনশাআল্লাহ। অন্যান্য ফুল স্কলারশীপ গুলো হলো: ANSO scholarship UCAS full scholarship Shanghai Government scholarship (SGS) APFNet scholarship GSCAAS scholarship Huazhong Agricultural University scholarship FAFU scholarship আপনারা চাইলে গুগল করে বিস্তারিত দেখতে পারেন। এসকল স্কলারশীপে আবেদন করার জন্য আবেদন ফি লাগেনা। শুধু China Agricultural University তে আবেদন ফি আছে। তাই আপনারা চেষ্টা করবেন সব গুলো স্কলারশীপে আলাদা আলাদা আবেদন করতে। তার জন্য আলাদা আলাদা professor manage করে Acceptance letter নিয়ে নিবেন। কারন আপনি জানেন না আপনার রিজিকে কোনটা আছে। আমি উপরের প্রায় সব গুলো স্কলারশীপের জন্য সেলেক্টেড হয়েছিলাম। শুধু CSC type A বাদ দিয়ে। প্রায় ১৬ টার মত প্রফেসরের থেকে Acceptance letter নিয়েছিলাম। আজ এই পর্যন্তই থাক। পরে একদিন লিখবো ANSO and UCAS full scholarship নিয়ে।

মো: শফিউল ইসলাম, চাইনিজ গভার্নমেন্ট স্কলারশীপ হোল্ডার-২০২৪, মাস্টার্স ইন প্ল্যান্ট প্যাথলজি চায়না এগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সিটি, বেইজিং; ব্যাচেলর ইন এগ্রিকালচার বাংলাদেশ এগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সিটি; CGPA- 3.42; IELTS – 6 Publications-7.

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ডীনস্ অ্যাওয়ার্ড- ২০২২’ পেল গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের প্রতিচী

ডীনস্ অ্যাওয়ার্ড- ২০২২ এর পিছনের গল্পটি শুনতে চাই !

আসলে, দীর্ঘ ১৮২৫ টা দিনের প্রতীচীর একটু একটু করে বেড়ে ওঠার গল্প। ২০১৭ সালে বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি ডিপার্টমেন্টে, সত্যি কথা বলতে একেবারে শূণ্য আশা আর অনুভূতি নিয়ে ভর্তি হয়েছিলাম। আজীবন নিজেকে নিয়ে মাইনাস কনফিডেন্সে ভোগা আমি শেষবারের মতো একটু মাথা তুলে বাঁচার চেষ্টা করেছিলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষে। ডাক্তারি পড়ার স্বপ্ন, লক্ষী মেয়ে হওয়ার চেষ্টা করা, মানুষের মন জুগিয়ে চলা এসব কিছু মাথা থেকে একেবারে ঝেড়ে ফেলে স্বতন্ত্রভাবে নিজের জীবনটা উপভোগ করার চেষ্টা শুরু করি। লক্ষ্য রেজাল্টের দিকে ছিলোনা, বরং, পরিচিত গন্ডির বাইরে গিয়ে এক্সপ্লোরিং এর দিকে ছিলো। ক্লাবিং করতাম, ছবি আঁকা, আবৃত্তি, উপস্থাপনা, গান কোনোকিছুই বাদ দেইনি। গোগ্রাসে বই আর মুভি-সিরিজও গিলেছি প্রায় প্রতিদিন। আমি বলবো না সবদিক সামলে রেখে সেরা হবার চেষ্টা করেছি। আমি শুধু একটু ভালো থাকতে চেয়েছি, স্বাধীন হতে চেয়েছি, নিজেকে চিনতে চেয়েছি, নিজেকে প্রাধান্য দিয়েছি। এই ভালো থাকতে চেষ্টা করাটাই আমার জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। টানা ২ মাসের ফাইনাল এক্সামগুলোতে শক্ত থাকতে সাহায্য করেছে।  আমার এই প্রাপ্তি উৎসর্গ করছি আমার আম্মুকে, যে আমাকে শক্ত হতে শিখিয়েছে; আমার বাবাকে, যে এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজে আমার পায়ে শেকল পরায়নি, বরং উড়তে শিখিয়েছে; আমার নানুকে, যে কোনোদিনও আমার উপর থেকে বিশ্বাস হারায়নি, আমার প্রতিটা অর্জনকে উদযাপন করেছে। সবশেষে ইউরির কথা বলতেই হয়, যে আমার হাত ধরতে কোনোদিন দ্বিধা করেনি। আসলে আরো অসংখ্য মানুষকে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানানো উচিত। আমার সুবৃহৎ পরিবার, বিভাগের শ্রদ্ধেয় শিক্ষকরা, বন্ধু-বান্ধব-সবার কাছে আমি ঋণী।

আপনার বেড়ে ওঠা?

আমার জন্ম ১৯৯৭ সালে গাইবান্ধা জেলায়। গাইবান্ধা আমাদের পৈতৃক নিবাস। আমার বাবার বাড়ি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় এবং মা’র বাড়ি পলাশবাড়ি উপজেলায়। এই পলাশবাড়ি উপজেলার ইউনিক কিন্ডার্গার্টেনে আমি ভর্তি হই এবং সেখানে ২য় শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা শেষে ২০০৬ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলে ৩য় শ্রেণিতে ভর্তি হই। এর পর থেকে বাকি শিক্ষাজীবন আমার রাজশাহীতেই কেটেছে।

বিভিন্ন পরীক্ষার ফলাফল গুলো জানতে চাচ্ছি!


এই বিদ্যালয় থেকে ২০১৪ সালে এস.এস.সি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ (গোল্ডেন) পেয়ে উত্তীর্ণ হই। এর পরে রাজশাহী নিউ গভ. ডিগ্রী কলেজ থেকে ২০১৬ সালে জিপিএ ৫ (গোল্ডেন) পেয়ে ২০১৬-১৭ সেশনে ভর্তি হই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগে। প্রথম বর্ষে আমার জিপিএ ৩.৮২ থাকলেও পরবর্তী বর্ষগুলোতে ক্রমান্বয়ে ৩.৯৫, ৩.৯২, এবং শেষ বর্ষে ৪.০০ অর্জন করি এবং অনার্সে সিজিপিএ দাঁড়ায় ৩.৯৩। সম্প্রতি আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ডীনস্ অ্যাওয়ার্ড- ২০২২’ এর জন্য মনোনয়ন পাই। গত ০৭.০৬.২০২৩ তারিখে আমাদের বিভাগের আরও ছয় জনের সাথে আমি এই পুরষ্কার গ্রহণ করি।

অন্য কোন বৃত্তি পেয়েছেন?


B.Sc. ডিগ্রী লাভের পরপরই একই বিভাগে মাস্টার্সে ভর্তি হই এবং একইসাথে বিভাগের Laboratory of Environmental Health Sciences এ আমার গবেষণার হাতেখড়ি হয়। মাস্টার্স কোর্সের অন্তর্ভুক্ত থিসিস এর জন্য ২০২২ সালে National Science and Technology (NST) Fellowship – এর জন্য আবেদন করি। আমার থিসিসের বিষয় হচ্ছে ‘Exploring the association between chronic arsenic exposure and circulating leptin through a cross-sectional study”. আমার গবেষণা প্রস্তাবপত্রটি NST Fellowship-2022 এর জন্য মনোনীত হয়েছে৷ বর্তমানে আমি আমার থিসিসের টপিকটি নিয়ে গবেষণারত আছি। ইতোমধ্যেই ‘Cleodendrum viscosum leaves attenuate lead-induced neurotoxicity through upregulation of BDNF-Akt-Nrf2 pathway in mice” শীর্ষক আমাদের একটি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। এখানে আমি কো-অথর হিসেবে আছি। গবেষণা প্রবন্ধটি প্রখ্যাত Elsevier এর Journal of Ethnopharmacology (IF 5.195) তে প্রকাশিত হয়েছে। 

পড়াশুনা ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য কোন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন?

বিভাগের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান সমিতিতে ‘সাংস্কৃতিক সম্পাদক’ পদে ২০১৭-২০১৮ সাল পর্যন্ত কর্মরত ছিলাম।  ২০১৭ সালে ১ম বর্ষে পড়াকালীন সময়ে BFDF কর্তৃক আয়োজিত Rajshahi University Freshers’ Debate Championship এ আমার দল রানার-আপ হয়।  ২০১৮ সালে (২য় বর্ষ) American Society for Microbiology, International Student chapter of University of Rajshahi কর্তৃক আয়োজিত রিভিউ সাবমিশন কম্পিটিশনে প্রথম হই। ২০১৮-২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রান বিজ্ঞান সমিতির ‘মহিলা সম্পাদক’ পদে কাজ করেছি।  ২০২০ (৪র্থ বর্ষ) এ Biochemistry and Molechular Biology English Language club এর General Secretary এবং পরবর্তীতে একই ক্লাবের Vice President পদে নিযুক্ত হই। এখন এই ক্লাবে VP হিসেবে আছি।

 

 

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরকারি বৃত্তি নিয়ে বিদেশে স্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজিসে পড়াশুনা

সরকারি বৃত্তি নিয়ে আল ফারাবি কাজাক ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি , কাজাখস্তান এ স্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজিতে পড়াশুনা করতে যাচ্ছেন মাহাতাব আজমাইন রিফাত।  বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে পড়াকালীন সময় তিনি এই বৃত্তির জন্য মনোনীত হয়েছেন।

মাহতাব অ্যাজমাইন রিফাতের সাক্ষাৎকার :

বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় পড়াকালীন সময়ে আপনি কিভাবে এই  বৃত্তিটি লাভ করলেন?

ছোট বেলা থেকে ভালো ছাত্র হবার সুবাধে এসএসসি ও এইচসসিতে জিপিএ ৫ পেয়েছিলাম।কিন্তু এই জিপিএ ৫ এর শেষ কোথায় ? ভালো ছাত্র ছিলাম বলে সবাই ভেবেছিল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় চান্স পেয়ে যাব,কিন্তু কোথাও হলো না।তারপর ইয়ার গ্যাপ দিয়ে শুরু করলাম বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি যুদ্ধের প্রস্তুতি।তখন আমি একটা মেডিকেল প্রস্তুতির একটা মেসেঞ্জার গ্রুপে অ্যাড ছিলাম।সেইখানে আমার বেশ কিছু বন্ধু মহলের সাথে পরিচয় হয়। তারমধ্যে কিছু বন্ধু বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিয়ে আলাপ করতো।আসলে মূলত গল্পটার শুরু এখান থেকে- তাদের কাছ থেকে উৎসাহ পেয়ে বিদেশে উচ্চশিক্ষার যাত্রা শুরু করি সময়টা ছিল ২০২০ সাল।

ঠিক তখন ঐভাবে আমি বিদেশ উচ্চ শিক্ষার জন্য যেসব ডকুমেন্টস লাগে জোগাড় করতে পারি নি।তবে আমার মাঝে ছিল প্রবল ইচ্ছা শক্তি কঠোর পরিশ্রম। আমি লেগে পড়লাম সব গোছানো আর রিসার্চ করে সেই সব শিক্ষাবৃত্তি গুলোতে আবেদন করা শুরু করি।বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি যুদ্ধ শেষে কোথাও চান্স না পেয়ে আমার ঠাই হলো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। অনেক ভালো প্রস্তুতি নিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম বর্ষ ফাইনাল পরীক্ষা দিলাম কিন্তু আশানুরূপ ফলাফল করতে পারলাম না। এরপর থেকে আমার অনেকটাই মন ভেঙে গিয়ে বাইরে পড়াশোনা করার প্রতি আরো দৃঢ় মনবল তৈরি হয়েছে।

মূলত সরকারি স্কলারশিপ গুলোতে নিজে নিজে ঘরে বসে আবেদন করা শুরু করি। সর্বপ্রথম আমি তুর্কি সরকারি স্কলারশিপ আবেদন করি কিন্তু সেইটাই আমি সফল হয় নি।তারপরও আমি দমে যায় নি কারন আমি মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম যে আমার একটা স্কলারশিপ ম্যানেজ করতেই হবে আমাকে বিদেশ উচ্চ শিক্ষার জন্য যেতেই হবে।তারপর আমি সব সরকারি বেসরকারি স্কলারশিপ গুলোতে আবেদন করতাম। আমি মনে ভাবতাম হোক বা না হোক আবেদন করব আমি।তারপর একে একে পাসপোর্ট,জন্ম নিবন্ধন, এন আই ডি, Recommendation letter, SOP জোগাড় করতে থাকি।এইখানে বলে রাখা ভালো যে LOR,SOP এই গুলো আমি অনেক ভাইয়া আপুদের কাছ থেকে জোগাড় করে আইডিয়া নিয়ে নিজের মতো করে লিখতাম।একে একে যখন অনেকগুলো স্কলারশিপ আবেদন করে ফলাফল পাচ্ছি না রিজেক্ট খাচ্ছিলাম। আর খুজছিলাম কি কারনে রিজেক্ট হচ্ছে কি ইমপ্রুভমেন্ট করা দরকার।নিজেকে আরও প্রস্তত করছিলাম।যেহেতু সবার কাছে শুনেছিলাম বাইরে যেতে হলে নাকি ECA ভূমিকা অনেক।যেই ভাবা সেই কাজ নেমে গেলাম বিভিন্ন অর্গানাইজেশনে ক্যাম্পাস এম্বাসেডর ,ভলেন্টিয়ার এর কাজ সেই সাথে ইন্টার্নশিপ ও করছিলাম বেশ কয়েকটা।বেশ ভালই সার্টিফিকেট অর্জন করলাম। এছাড়া ফ্রিল্যান্সিং টা শিখে রেখেছিলাম।ড্রাইভিং টা শিখেছিলাম কারন যেহেতু বাইরে যাব বলে।তারপর ফিনল্যান্ড আবেদন করি সেখানেও রিজেক্ট খাই।মালেশিয়ার আলবুখারিতে আবেদন করি সেখানেও কি কারনে জানি রিজেক্ট করল বুজলাম না।তারপর ইন্দোনেশিয়ার সোরাবায়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার অফার লেটার পাই।তারপর Study in india থেকে অফার লেটার পাই।আর অবশেষে আমি কাজাখস্তান সরকারি স্কলারশিপে আবেদন করি।এইখানে আবেদন প্রক্রিয়া ছিল একদম সোজা জাস্ট ডকুমেন্টগুলো সাবমিট করা। আগেই বলেছিলাম আমার কাছে সব ডকুমেন্টস জোগাড় করা ছিল তাই কস্ট করতে হয় নি।আবেদন করার পর এইখানে ২ টা ধাপ ছিল।১) সাইকোলজি টেস্ট ২) ইন্টারভিউ। আল্লাহর রহমতে আমি সাইকোলজি টেস্ট পাস করি।তারপর আসে ইন্টারভিউ মেইল।ইন্টারভিউ এর ব্যাপারে একটু বলি যেহেতু অনেক স্কলারশিপ এ আমি আবেদন করেছি ইন্টারভিউ দিয়েছি মোটামুটি একটা অভিজ্ঞতা হয়ে গিয়েছিল ইন্টারভিউতে কি রকম প্রশ্ন হতে পারে নিজেকে কি রকম কনফিডেন্ট রাখতে হয়। নিজেকে সেই ভাবে প্রস্তুত করে গেলাম ইন্টারভিউ বোর্ডে।যদিও ইন্টারভিউ টি হয়েছিল অনলাইনে।আমার ইন্টারভিউ বোর্ড একজন ম্যাডাম ছিল উনি বন্ধুসুলভ ও হাসি খুশি ছিলেন।আমাকে বেশ নরমাল প্রশ্ন করেছিল।আমি ঠিকঠাক মত উত্তর দিয়েছিলাম।আর দীর্ঘ দুমাস পর আমার কাঙ্খিত স্কলারশিপ টি পেলাম,তাও আবার আমার পছন্দের Space Engineering And Technologies সাবজেক্টের উপর।

আপনি কোন ওয়েবসাইট থেকে এই বৃত্তির জন্য আবেদন করেছিলেন?

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ শিক্ষা মন্ত্রণালয় https://www.shed.gov.bd/?fbclid=IwAR0hQMSoYLD6kEGjxlvGNGRaiAMSJ92azaPkxd-sHZo-ur0gMcvDl6l3fWs

আরো দেখতে পারেন https://enic-kazakhstan.edu.kz/en/post/94?fbclid=IwAR3U26wJY6RpM8zg-nns6DrDjJKwUzTgX9baNAZDW6WhNelGtayrwhoIxpg

যারা আপনার মত বৃত্তি পেতে চায় তাদের জন্য কিছু বলুন!

সবশেষ একটা কথাই বলব ,নিজের ইচ্ছা শক্তি,সাহস পরিশ্রম করতে পারলেই সব সম্ভব,নিজের পথ নিজেকেই খুজে নিতে হবে।আমার জন্য দোয়া করবেন ,আর সবার জন্য শুভ কামনা।

৯ বাংলাদেশীর সুইডেনে বৃত্তি লাভ

লিখছেন ফরহাদ প্রধান, সুইডেন হতে :

এস আই (The SI) স্কলারশিপ (SISGPS-Swedish Institute Scholarships for Global Professionals) ২০২৩-২০২৪ এর ফলাফল প্রকাশ করেছে । এ বছর সারা বিশ্বের প্রায় ১০ হাজার আবেদনকারীর মধ্যে ২৯৯ জনকে এই বৃত্তির জন্য মনোনীত করা হয়েছে।

এদের মধ্যে  বাংলাদেশের সর্বমোট ৯ জন + (২ জন ওয়েটিং লিস্ট) এই স্কলারশিপ পেয়েছেন।

এই বৃত্তির আওতায় শিক্ষার্থীরা যেসব সুবিধা ভোগ করবেন –

১. যাতায়াতের টিকেট

২. ইউনিভার্সিটি সম্পূর্ণ টিউশন ফি

৩. ইন্সুরেন্স

৪. প্রতি মাসে ১ লাখ ১২ হাজার টাকা (১১০০০ সুইডিশ ক্রোনার), ইত্যাদি

বিগত বছরগুলোতে অনেক বাংলাদেশী শিক্ষার্থী এই স্বনামধন্য স্কলারশিপটি পেয়েছেন। বিগত বছরের ফলাফলের পর্যালোচনা থেকে দেখা যায় – অনেক বাংলাদেশী শিক্ষার্থী দ্বিতীয় তৃতীয়বার আবেদন করে এই স্কলারশিপ পায়। আবেদনের লিংক (ক্লিক করুন https://si.se/en/apply/scholarships/swedish-institute-scholarships-for-global-professionals/)

বাংলাদেশি কানাডিয়ান স্বপ্নীল কবীর এর সাফল্য

২০-২৬ এপ্রিল, ২০২৩ আমেরিকার ফ্লোরিডা স্টেটের অরলেন্ডুতে অনুস্টিত হচ্ছে হাইস্কুল পর্যায়ের DECA (Distributive Education Clubs of America) প্রতিযোগিতার ফাইনাল পর্ব। বাংলাদেশি কানাডিয়ান স্বপ্নীল কবীর ২ টি ব্যক্তিগত ইভেন্টে ও ১ টি গ্রুপ ইভেন্টে কানাডা চ্যাম্পিয়ন হিসেবে মুল পর্বে লড়ছেন। তিনি বর্তমানে টরন্টোর স্বনামধন্য পাবলিক স্কুল Marc Garneau Collegiate Institute (MGCI) এ TOPS প্রোগ্রামের নাইন গ্রেডের ছাত্র। তিনি ২০২২ সালে কানাডা রয়েল জিউগ্রাফিক্যাল সোসাইটির প্রতিযোগিতায় ন্যাশনাল রানার্সআপ। কানাডা থেকে মোট ৫ জনের একটি গ্রুপের সাথে ১ জন প্রিন্সিপাল ও ১ জন শিক্ষক সহ তারা আমেরিকার ফ্লোরিডা অবস্থান করছেন। CP24 কানাডিয়ান টিভি তার লাইভ সম্প্রচার করেছে।

DECA লক্ষ্য বিপণন, অর্থ, এবং ব্যবস্থাপনায় উদীয়মান নেতা এবং উদ্যোক্তাদের প্রস্তুত করা। সংস্থাটি তার সদস্যদের সম্মেলন, প্রতিযোগিতা এবং নেতৃত্ব উন্নয়ন প্রোগ্রাম সহ তাদের দক্ষতা এবং দক্ষতা বিকাশের জন্য বিভিন্ন সংস্থান এবং সুযোগ সরবরাহ করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ টি রাজ্যের পাশাপাশি বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে ডেকার ২২৫হাজার এরও বেশি সদস্য রয়েছে।

ইউরোপে সম্পূর্ণ বিনা খরচে পড়ার বৃত্তি লাভ করলেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র

টুটুল কুমার সাহা ২০২৩-২৫ শিক্ষাবর্ষে ইউরোপীয় ইউনিয়ন-অর্থায়নে ইরাসমাস মুন্ডাস মাস্টার্স বৃত্তি প্রোগ্রামে একাধারে ৩ টি আলাদা প্রোগ্রামের জন্য শিক্ষাবৃত্তি লাভে বিবেচিত হয়েছেন। এই বৃত্তির আওতায় তিনি লাভ করবেন – ভ্রমণ ভাতা, মাসিক উপবৃত্তি, ইনস্টলেশন খরচ, টিউশন ফি, চিকিৎসা বীমা । বিগত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে আমরা জানতে পেরেছি , এই বৃত্তির আওতায় আপনি আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা করার সুযোগ পাবেন, সকল ব্যয় বহনের পরেও কিছু টাকা খুব সহজেই সেভ করা যায়। আর সমগ্র ইউরোপ ঘোরার সুযোগ তো রয়েছে।

স্নাতকোত্তর প্রোগ্রাম ৩ টি হলোঃ

1.MBRSea (International Master in Marine Biological Resources) দেশসমূহঃ বেলজিয়াম, নরওয়ে, পর্তুগাল।

2. MER (International Master in Marine Environment) দেশসমূহঃ ফ্রান্স, স্পেন, পর্তুগাল।

3. AquaH (International Master in Health Management in Aquaculture) দেশসমূহঃ বেলজিয়াম, নরওয়ে, নেদারল্যান্ড।

তিনটি প্রোগ্রামের জন্য মনোনীত হলেও তিনি নির্বাচন করেছেন MER প্রোগ্রাম, যেখানে তিনি দুই বছরের মাস্টার্স প্রোগ্রামে মোট তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় যথাক্রমে, University of Bordeaux (ফ্রান্স); University of Basque (স্পেন) এবং University of the Azores (পর্তুগাল) এ পড়াশোনা/গবেষণা করবেন।

টুটুল কুমার সাহা বাংলাদেশের যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) ২০১৫-১৬ সেশনের ফিশারিজ এন্ড মেরিন বায়োসায়েন্স (এফএমবি) বিভাগের ছাত্র ছিলেন। ২০১৯ সালে এফএমবি বিভাগ থেকে ফিশারিজে স্নাতক এবং পরবর্তীতে ২০২২ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি)ময়মনসিংহ থেকে ফিশারিজ বায়োলজি এন্ড জেনেটিক্স বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। স্নাতকোত্তর চলাকালীন ও পরবর্তী সময়ে তিনি তার মাস্টার্স থিসিস সুপারভাইজার (প্রফেসর ড. জাকির হোসেন) এর ল্যাবে রিসার্চ এসিস্টেন্ট (RA) হিসাবে গবেষণা শুরু করেন এবং লিটারেচার রাইটিং, পোস্টার/ওরাল প্রেজেন্টেশন, ডেটা এনালাইসিস সহ নানাবিধ অভিজ্ঞতা অর্জন করেন।

রিসার্চ এসিস্টেন্ট থাকা অবস্থায় টুটুল সাহা ২০২৩-২৫ শিক্ষাবর্ষে ইউরোপীয় ইউনিয়ন-অর্থায়নে ইরাসমাস মুন্ডাস মাস্টার্স বৃত্তি প্রোগ্রামে একাধারে ৩ টি আলাদা প্রোগ্রামের জন্য শিক্ষাবৃত্তি লাভে বিবেচিত হয়েছেন।

টুটুল সাহার লক্ষ্য হলো ইরাসমাস মাস্টার্স সুসম্পন্ন করে, পিএইচডি তে সমুদ্র বিজ্ঞান বিষয়ে গবেষণা করে, বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় সমুদ্র সেক্টরকে সঠিকভাবে কাজে লাগানো। তিনি আরও যুক্ত করেন, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ফিশারিজ বা মেরিন সায়েন্সে উচ্চশিক্ষার অনেক সুযোগ রয়েছে।

তার একাডেমিক প্রফাইলটি তুলে ধরা হলো (এই রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত) –

জিপিএ (ব্যাচেলর) : ৩.৭৯৪/৪.০০

জিপিএ (মাস্টার্স) : ৩.৯০৭/ ৪.০০

আইইএলটিএস (একাডেমিক) স্কোর : ৭

গবেষণাপত্র : ৩ টি (+২টি প্রকাশের অপেক্ষায়)

কনফারেন্স উপস্থাপনা: ২টি

তার গবেষণা কর্ম সম্পর্কে জানতে,  রিসার্চগেট প্রফাইলটি সংযুক্ত করা হলো (ক্লিক করুন)

 

জার্মানিতে ক্রিসপার-ক্যাস (CRISPR-Cas) জিন এডিটিং প্রযুক্তির উপর পিএইচডি গবেষণার সুযোগ লাভ করেছেন বাংলাদেশের মামুনুর রশিদ রাজু

মোঃ মামুনুর রশিদ রাজু জার্মানির Justus Liebig University of Giessen তে ক্রিসপার-ক্যাস জিন এডিটিং আধুনিক প্রযুক্তির উপর পিএইচডি গবেষনা শুরু করেছেন। তাঁর গবেষণার মূল বিষয়বস্তু হলো ক্রিসপার-ক্যাস প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে ফাবা বিনের (Faba bean-Vicia faba) জলবায়ু সহিষ্ণ, উচ্চ ফললশীল জাত উদ্ভাবন করা। মামুনুর রাশিদ পিএইচডি গবেষণার শুরুর আগে জার্মানির আরও একটি সনামধন্য প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স প্ল্যাংক ইনস্টিটিউট ফর প্লান্ট ব্রিডিং রিসার্চে  এক বছর ইন্টার্ন হিসাবে কাজ করেন।

তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ২০১০-১১ সেশনের কৃষি অনুষদের ছাত্র ছিলেন। ২০১৫ সালে কৃষি অনুষদ থেকে স্নাতক এবং ২০১৭ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন এ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। স্নাতকোত্তর শেষ করে মামুনুর রাশিদ ব্র্যাক কৃষি গবেষণা এবং উন্নয়ন কেন্দ্রে সবজি প্রজননবিদ হিসাবে কর্মরত ছিলেন।

ব্র্যাকে কর্মরত অবস্থায় মামুনুর রাশিদ ২০১৯ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন-অর্থায়নে এরাসমাস মুন্ডুস মাস্টার্স বৃত্তি প্রোগ্রামে মনোনীত হয়। পরবর্তীতে সুইডেনের সুইডিশ ইউনিভার্সিটি অফ এগ্রিকালচারাল সাইন্স এবং ফিনল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অফ হেলসিঙ্কি থেকে উদ্ভিদ প্রজনন এ ২য় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

মামুনুর রশিদের লক্ষ্য হলো পিএইচডি গবেষণা শেষ করে, আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশের তথা বিশ্বের কৃষি গবেষণায় অবদান রাখা। তিনি আরো যোগ করেন জার্মানিতে কৃষিতে উচ্চশিক্ষার অনেক সুযোগ রয়েছে।

বিদেশি বৃত্তি পেতে যা জানা জরুরি

কলেজে পড়ার খরচ বেশি
যুক্তরাষ্ট্রে ২০২১ সালে ২ কোটির বেশি শিক্ষার্থী কলেজে ভর্তি হয়েছেন। অনেক শিক্ষার্থীকেই টিউশন ফি, আবাসন, বই ও অন্যান্য সরঞ্জাম বাবদ অনেক অর্থ ব্যয় করতে হয়। আর এসব কিছুরই মূল্য অনেক বেড়ে গেছে। ক্রমবর্ধমান এই ব্যয়ের সঙ্গে অনেকেই তাল মেলাতে পারেন না। এ কারণে অনেক শিক্ষার্থীর জন্য উচ্চশিক্ষা গ্রহণ কঠিন হয়ে পড়েছে।

১৯৯৮ থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে অসংখ্য কলেজ লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হওয়া শুরু করে। এরপরের বছরগুলোয় অতিরিক্ত অর্থ আয়ের আশায় আরও অনেক কলেজ লাভজনক প্রতিষ্ঠানের মডেল অনুসরণ করেছে।

ডিগ্রি দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠিত কলেজগুলোকেও এখন তালিকাভুক্ত হতে অনেক অর্থ ব্যয় করতে হয়। আর এই ব্যয় নির্বাহের জন্য কলেজগুলো শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি বাড়িয়ে দেয়। এটাও পড়াশোনার খরচ বাড়ার অন্যতম একটি কারণ। আর উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণ, কর্মী ও প্রযুক্তির খরচও আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে।

বৃত্তি যে কারণে দরকার
যুক্তরাষ্ট্রের ব্যুরো অব লেবার স্ট্যাটিসটিকসের তথ্য অনুযায়ী, স্নাতক ডিগ্রিধারী প্রার্থীরা গড়ে প্রতি সপ্তাহে হাইস্কুল ডিগ্রিধারীদের চেয়ে ৫২৫ ডলার (প্রায় ৫৪ হাজার ৭১৩ টাকা) বেশি আয় করতে পারেন।

এ কারণে কলেজ শিক্ষার অর্থায়নের জন্য অনেক শিক্ষার্থী ও পরিবার বৃত্তির কথা ভাবেন। কারণ, বৃত্তি পেলে ওই শিক্ষার্থীর টিউশন ফিসহ শিক্ষাসংক্রান্ত অন্যান্য খরচ মওকুফ হয়ে যায়। আর ওই শিক্ষার্থীর পরিবারকেও কোনো ধরনের ঋণ করতে হয় না এবং পারিবারিক সঞ্চয়ও ভেঙে ফেলতে হয় না।

 বিদেশি বৃত্তি পেতে যা জানা জরুরি

ছবি: সায়েন্সেস পো ইউনিভার্সিটির ওয়েসাইট থেকে নেওয়া

কলেজের বৃত্তি
যেকোনো বৃত্তি পাওয়ার আগে নিজেকে প্রস্তুত করে নিতে হবে। একটি আকর্ষণীয় জীবনবৃত্তান্ত তৈরি করতে হবে। এই জীবনবৃত্তান্তে অবশ্যই পাঠ্যক্রম বহির্ভূত কার্যকলাপ ও স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। শিক্ষাগত যোগ্যতা ও নেতৃত্বের দক্ষতার ওপর জোর দিতে হবে। কারণ, এটাই প্রার্থীর আগ্রহকে প্রতিফলিত করবে।

যদি কোনো বিষয়ের ওপর ফোকাস করতে সমস্যা হয় বা হিসাব-নিকাশের প্রয়োজন হয়, তাহলে দ্রুত তা সমাধানের চেষ্টা করতে হবে। এ বিষয়ে সহযোগিতা করার জন্য কিছু ওয়েবসাইট আছে। সেখান থেকেও সহযোগিতা নিয়ে সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। এরপর যত দ্রুত সম্ভব বৃত্তি খুঁজতে হবে।

যোগ্যতা অনুযায়ী বৃত্তি খুঁজতে হবে
যোগ্যতা অনুযায়ী বৃত্তি খুঁজে পাওয়ার সবচেয়ে সহজ মাধ্যম হলো ইন্টারনেট। কারণ, অনেক স্কলারশিপ ওয়েবসাইটে ওই বৃত্তি পাওয়া যোগ্যতা উল্লেখ করা থাকে। তা দেখে ওই বৃত্তির জন্য আবেদন করা যাবে কি না, তা সহজেই বোঝা যায়। এ ছাড়া অনেক বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে আগ্রহ, বিষয় ও যোগ্যতা নির্বাচন করে বৃত্তির তথ্য পাওয়া যায়। এতে সময় কম ব্যয় হয়। কারণ, শিক্ষার্থী যে বিষয়ে বৃত্তি পেতে ইচ্ছুক, তা নির্বাচন করে দিলে কেবল ওই বিষয়ের বৃত্তির তথ্যই দৃশ্যমান হবে। অযথা একাধিক বৃত্তির তথ্য দেখে সময় ব্যয় হয় না।

আবেদনে যা দরকার
আবেদনের জন্য যা যা প্রয়োজন, তা আগে ভালো করে বুঝে নিতে হবে। ওই স্কুল–কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তির নিয়ম জেনে নিতে হবে। যেমন কলেজে চার ক্যাটাগরিতে বৃত্তি দেওয়া হয়। এগুলো হলো—ফেডারেল অনুদান (৪৭ শতাংশ), স্কুল বৃত্তি (৩৫ শতাংশ), প্রাইভেট স্কলারশিপ (৩৫ শতাংশ) ও রাষ্ট্রীয় অনুদান (৮ শতাংশ)। প্রতিটি ক্যাটাগরির জন্য আবেদনে আলাদা আলাদা প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

ফেডারেল অনুদানের জন্য আবেদন করতে হলে ফ্রি অ্যাপ্লিকেশন ফর ফেডারেল স্টুডেন্ট এইড (এফএএফএসএ) ফরম পূরণ করতে হয়। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে একটি প্রবন্ধসহ অন্যান্য উপকরণ জমা দিতে হয়।

আবার প্রাইভেট স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে হলে প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো ওই প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভর করে। এ কারণে আবেদনের যোগ্যতা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয় মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। সেই সব যোগ্যতা আবেদনকারীর পূরণ হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে।

আবেদনের প্রস্তুতি
আবেদনকারী কোন বৃত্তির জন্য যোগ্য, তা নিশ্চিত জানা হলে আবেদন করতে কী কী নথি ও বিষয় প্রয়োজন, সে দিকে মনোযোগ দিতে হবে। যেসব বৃত্তির জন্য আবেদন করা যাবে, আবেদনের সময়সীমা ও আবেদনে কী কী লাগবে, তার একটা তালিকা তৈরি করে নিতে হবে।

শিক্ষাগত যোগ্যতার মার্কশিট ও লেটারস অব রেকমেন্ডেশনসহ আবেদনের জন প্রয়োজনীয় উপকরণ গুছিয়ে হাতের কাছে রাখতে হবে, যেন প্রয়োজন হলেই তা দিয়ে দেওয়া যায়।

সবশেষে লেখার দক্ষতা বাড়াতে হবে। কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে চারটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—গ্রেড, পাঠ্যক্রম, পরীক্ষার স্কোর ও প্রবন্ধ লেখা। চার নম্বর বিষয়টি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এর দক্ষতার ওপর নির্ভর করছে আবেদন গ্রহণ হবে কি না। প্রবন্ধ লেখার দক্ষতা বাড়াতে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে লেখার অনুশীলন করতে হবে। ইন্টারনেটসহ নানা উৎস থেকে নমুনা প্রবন্ধ পর্যালোচনা করতে হবে।

নিউজিল্যান্ডে বৃত্তি নিয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ

যোগ্যতা
স্নাতকের জন্য উচ্চমাধ্যমিকে এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ের জন্য স্নাতকে ভালো ফল থাকতে হবে। ওয়াইকাটো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হবে। মেধার ভিত্তিতে এই বৃত্তি দেওয়া হয়। ইংরেজি ভাষা দক্ষতার সনদ থাকতে হবে।

মেধার ভিত্তিতে এই বৃত্তি দেওয়া হয়।

মেধার ভিত্তিতে এই বৃত্তি দেওয়া হয়।
ছবি: ওয়াইকাটো বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হবে। স্পনসরের মাধ্যমে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তির আওতায় পড়বেন না।

সুযোগ-সুবিধা
এই বৃত্তির আর্থিক মূল্য প্রায় ১০ লাখ টাকা (১৫ হাজার নিউজিল্যান্ড ডলার)।

আবেদন যেভাবে
প্রথমে আবেদনকারীদের ওয়াইকাটো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হবে। এ জন্য ভর্তির আবেদন করতে হবে। এই লিংকে যে বিষয়ে পড়াশোনা করতে ইচ্ছুক, তার বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নিতে হবে।

এই বৃত্তির আওতায় ওয়াইকাটো বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে থাকা যেকোনো বিষয়ে পড়াশোনা করা যাবে।

এই বৃত্তির আওতায় ওয়াইকাটো বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে থাকা যেকোনো বিষয়ে পড়াশোনা করা যাবে।
ছবি: ওয়াইকাটো বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া

ভর্তির আবেদন গ্রহণ হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার নিয়ে বৃত্তির জন্য আবেদন করতে হবে। ওয়াইকাটো বিশ্ববিদ্যালের ওয়েবসাইটের এই লিংকে গিয়ে Next Step-এ ক্লিক করে আবেদন করতে হবে। এই লিংকে বৃত্তির বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে।

জাপানে বিনা মূল্যে ইন্টার্নশিপের সুযোগ

সুযোগ-সুবিধা

রিসার্চ ইন্টার্নশিপপ্রাপ্তদের প্রতি কর্মদিবসে ২ হাজার ৪০০ জাপানি ইয়েন (প্রায় ১ হাজার ৮৪৫ টাকা) দেওয়া হবে। এ ছাড়া ফ্রি ভিসা সাপোর্ট, ওআইএসটির শাটল বাসের পাস, ইন্টার্নশিপের জন্য জাপানে যাতায়াত বিমান টিকিট, আবাসন ও ইনস্যুরেন্সের সুবিধা আছে।

ওআইএসটি বছরে দুবার বিদেশি শিক্ষার্থীদের এই ইন্টার্নশিপের সুযোগ দেয়।

ওআইএসটি বছরে দুবার বিদেশি শিক্ষার্থীদের এই ইন্টার্নশিপের সুযোগ দেয়। 
ছবি: ওআইএসটির ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া

আবেদনের যোগ্যতা

  • যেকোনো দেশের শিক্ষার্থী আবেদন করতে পারবেন।
  • স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।
  • শিক্ষাজীবনে ভালো ফল থাকতে হবে।
  • ইংরেজিতে ভালো দক্ষতা থাকতে হবে।

প্রয়োজনীয় নথিপত্র

  • স্টেটমেন্ট অব পারপাস (৪০০ শব্দ)
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার মার্কশিট (ইংরেজিতে)
  • পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি
  • রিকমেন্ডেশন লেটার
  • ছবি

আবেদন যেভাবে
আগ্রহী প্রার্থীদের ওআইএসটির ওয়েবসাইটের এই লিংক থেকে ইন্টার্নশিপ–সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে হবে। এরপর এই ওয়েবসাইটে লগইন করার পর ফরম পূরণ করে আবেদন করতে হবে।

আবেদনের শেষ সময়: ১৫ এপ্রিল ২০২৩।